ফাইল ছবি
সিরাজুল হক সরকার : ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় পুলিশের নির্যাতনে আলতাব হোসেন নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনায় পুলিশের দুই এসআইকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে তাদেরকে ক্লোজড করা হয়। গতকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর আলতাবকে তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তারা ঘটনার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন।
মুক্তাগাছা উপজেলার ঘোগা ইউনিয়নের জামগড়া এলাকার ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী আলতাব হোসেনকে মুক্তাগাছা থানার এসআই আবুল খায়ের ও এএসআই হামিদুল ইসলাম গ্রেফতার করে তার পরিবারের কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না পেয়ে তিনদিন থানায় আটকে রেখে তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় এমন অভিযোগ করেন নিহত আলতাব হোসেনের পরিবার । এর পর ১মার্চ ডলার প্রতারণা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে আদালতে পাঠানো হয়। সে ৫ মার্চ জামিনে বের হয়ে এসে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন।
অসুস্থ্য অবস্থায় বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তির পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ওইদিন রাতেই বাবার লাশ কাঁধে নিয়ে অভিযুক্ত দুই পুলিশ অফিসারের বিচারের দাবি জানিয়ে ময়মনসিংহ প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সামনে হাজির হন আলতাবের বারো বছরের ছেলে আরিফ হোসেন। এর প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাতেই ঘটনার সাথে অভিযুক্ত পুলিশের এসআই আবুল খায়ের ও এএসআই হামিদুলকে ময়মনসিংহের পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়। পুলিশের এ ধরণের ঘটনায় জামগড়া গ্রামে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। গতকাল শুক্রবার সাংবাদিকরা ওই এলাকায় গেলে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী অভিযুক্ত ওই দুই পুলিশের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এর সাথে পুলিশের নতুন কোনো ঘটনার ভয়ও কাজ করছে গ্রামবাসীর মাঝে। জামগড়া গ্রামের চাঁন মিয়া, রুপচানসহ কয়েজন গ্রামবাসী সাংবাদিকদের বলেন, কতিপয় পুলিশের সোর্সের মাধ্যমে বিনা কারেন বিভিন্ন সময় তাদেরকে ধরে নিয়ে যায় থানায়। এর পর মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে তাদেরকে আবার ছেড়েও দেওয়া হয়। ওইদিন বিনা কারনেই আলতাবকে ধরে নিয়ে তার ওপর নির্যাতন চালানো হয় বলে আলতাবের বড় ভাই আজগর আলী জানান। পুলিশের দুই এসআই ক্লোজের বিষয়টির সত্যতা স্বীকার করে মুক্তাগাছা থানার ওসি বিপ্লব কুমার বিশ্বাস বলেন, ওই গ্রামটি ডলার প্রতারকদের অভয়ারন্য হিসেবে পরিচিতি রয়েছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ ডলার প্রতারণার সাথে জড়িত।